অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রচনা ও কবিতা

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হল একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গসহ সকল বাংলাভাষী অঞ্চলে পালিত একটি আন্তর্জাতিক বিশেষ দিবস, যা ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ নভেম্বরে এটি জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়। এটি শহীদ দিবস হিসাবেও পরিচিত। এ দিনটি বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি বিশেষ দিন হিসেবে ইতিহাসের পাতায় চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৯৫২ সালে একুশে ফেব্রুয়ারি এইদিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮, বৃহস্পতিবার) বাংলাকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকায় ছাত্র আন্দোলনরতদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে অনেক তরুণ ছাত্র গুলিবর্ষণে শহীদ হন। যাঁদের মধ্যে রয়েছে রফিক, জব্বার, সালাম, বরকত,শফিউর উল্লেখযোগ্য এবং এই কারণে এ দিনটি ইতিহাসের পাতায় শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ

অনুচ্ছেদ-১: পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর জন্য

২১ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, বাঙালি জাতির জন্য একটি গৌরবের দিন এবং সারা পৃথিবির মাতৃভাষাভাষী মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। ১৯৫২ সালে এই দিনেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাঙালি ছাত্রদের আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন রফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ বেশ কয়েকজন। তাদের আত্মত্যাগের রক্তে রাঙানো এই দিনটি শুধু ভাষার দাবির পক্ষে আন্দোলন নয়, এ বাঙালি জাতিসত্তার স্বাধীনতার পূর্বাভাস। ভাষা আন্দোলন শুরু হয় ১৯৪৭ সালে, যখন বাংলাদেশ তৎকালীন পাকিস্তানের অংশ ছিল। উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্তে বাঙালি জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ১৯৫২ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবির মিছিলের ওপর গুলি চালায় পুলিশ। শহীদদের রক্তে উত্তাল হয়ে ওঠে বাঙালি জাতি। সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে ভাষা আন্দোলন। এই আন্দোলনই বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের চুড়ান্ত পর্বের পথ রচনা করে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বরে বাংলাদেশের উদ্যোগে জাতিসংঘ ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এটি শুধুমাত্র বাঙালিদের জন্য নয়, সারা বিশ্বের মাতৃভাষাভাষী মানুষের জন্য মর্যাদার দিন। এই দিনটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, মাতৃভাষা আমাদের অস্তিত্বের মূল, আমাদের স্বাধীনতার শক্তি। তাই মাতৃভাষাকে ধারণ করার, লালন করার দায়িত্ব আমাদের সবার। চলুন, এই ২১ ফেব্রুয়ারিতে আমরা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে, মাতৃভাষাকে লালন করি। কেননা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করা মানেই আমাদের স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করা।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা

অনুচ্ছেদ, রচনা -২: এসএসসি (নবম – দশম শ্রেণী) পরীক্ষার জন্য

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হল প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি পালিত একটি বিশেষ দিবস, যা ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ নভেম্বরে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী পালন করা হয়। এটি শহীদ দিবস হিসাবেও পরিচিত। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পাকিস্তানের পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিবর্ষণে রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার, শফিউলসহ অসংখ্য মানুষ নিহত হন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপী মাতৃভাষার অধিকারের জন্য আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বরে জাতিসংঘের ৬৫তম অধিবেশনে বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তাবে ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণার ফলে বিশ্বব্যাপী মাতৃভাষার অধিকারের জন্য আন্দোলন নতুন করে প্রাণ লাভ করে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের উদ্দেশ্য রয়েছে। যেমন  এই দিবস পালনের মাধ্যমে বিশ্বের সকল ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়। মাতৃভাষার অধিকারের জন্য আন্দোলনকে শক্তিশালী করা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে: সমাবেশ ও সভা-সমিতি, রচনা, কবিতা, ও গান প্রতিযোগিতা। এই দিনে ভাষা শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী মাতৃভাষার অধিকারের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। এ দিবসটি মাতৃভাষার গুরুত্ব ও মর্যাদা সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করে তোলে। মাতৃভাষা দিবস বাঙালিদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি বাঙালি জাতির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক। বাংলা ভাষা বাঙালি জাতির প্রাণের ভাষা। এই ভাষার মাধ্যমে বাঙালি জাতি তাদের চিন্তাভাবনা, সংস্কৃতি, ও ঐতিহ্যকে প্রকাশ করে। মাতৃভাষা দিবস পালনের মাধ্যমে বাঙালিরা তাদের ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করে। মাতৃভাষা দিবস বাঙালিদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি বিশ্বব্যাপী মাতৃভাষার অধিকারের জন্য আন্দোলনের অনুপ্রেরণা দেয়। এই দিবসটি পালনের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাতৃভাষার অধিকারের জন্য সংগ্রামরত মানুষদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। মাতৃভাষা দিবস বাঙালিদের কাছে একটি গৌরবময় দিন। এই দিনটি পালনের মাধ্যমে বাঙালিরা তাদের ভাষার অধিকারের জন্য সংগ্রামরত শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানায়। বাংলা ভাষার গুরুত্ব ও মর্যাদা সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের মাধ্যমে বিশ্ববাসী জানতে পারে যে, বাংলা ভাষা একটি সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী ভাষা। এই ভাষার মাধ্যমে বাঙালি জাতি তাদের চিন্তাভাবনা, সংস্কৃতি, ও ঐতিহ্যের প্রকাশ করতে পারে। এই দিবস মাতৃভাষার অধিকারের জন্য আন্দোলনের অনুপ্রেরণা দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাতৃভাষার অধিকারের জন্য সংগ্রামরত মানুষদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। এই দিবসটি তাদের মনে সাহস ও শক্তি জোগায়। এই দিনটি বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক দিন।

একুশে ফেব্রুয়ারি কবিতা

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো, একুশে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।।
ছেলে হারা শত মায়ের অশ্রু
গড়ায়ে ফেব্রুয়ারী।।
আমার সোনার দেশের
রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী।।

জাগো নাগিনীরা জাগো নাগিনীরা জাগো কালবোশেখীরা
শিশু হত্যার বিক্ষোভে আজ কাঁপুক বসুন্ধরা,
দেশের সোনার ছেলে খুন করে রোখে মানুষের দাবী
দিন বদলের ক্রান্তিলগ্নে তবু তোরা পার পাবি?
না, না, না, না খুন রাঙা ইতিহাসে শেষ রায় দেওয়া তারই
একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।

সেদিনও এমনি নীল গগনের বসনে শীতের শেষে
রাত জাগা চাঁদ চুমো খেয়েছিল হেসে;
পথে পথে ফোটে রজনীগন্ধা অলকনন্দা যেন,
এমন সময় ঝড় এলো এক ঝড় এলো খ্যাপা বুনো।।

সেই আঁধারের পশুদের মুখ চেনা,
তাহাদের তরে মায়ের, বোনের, ভায়ের চরম ঘৃণা
ওরা গুলি ছোঁড়ে এদেশের প্রাণে দেশের দাবীকে রোখে
ওদের ঘৃণ্য পদাঘাত এই সারা বাংলার বুকে
ওরা এদেশের নয়,
দেশের ভাগ্য ওরা করে বিক্রয়
ওরা মানুষের অন্ন, বস্ত্র, শান্তি নিয়েছে কাড়ি
একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।।

তুমি আজ জাগো তুমি আজ জাগো একুশে ফেব্রুয়ারি
আজো জালিমের কারাগারে মরে বীর ছেলে বীর নারী
আমার শহীদ ভায়ের আত্মা ডাকে
জাগো মানুষের সুপ্ত শক্তি হাটে মাঠে ঘাটে বাটে
দারুণ ক্রোধের আগুনে আবার জ্বালবো ফেব্রুয়ারি
একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস – History Of The Language Movement Of 1952

অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তরজাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গসহ সমস্ত বাংলাভাষী পালিত একটি বিশেষ দিবষ যা ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘ গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিবছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যপী পালন করা হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি এটা শহীদ দিবস হিসাবেও পরিচিত । এ দিনটি বাঙালি জনগনের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসাবে ও চিহ্নত করা হয় ।

১৯৫২ সালে এইদিনে (৮ ফাল্গুন , ১৩৫৮, বৃহস্পতিবার ) পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবিতে ঢাকায় আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশ গুলিবর্ষণ করে এতে অনেক তরুণ ছাত্র শহীদ হন। যাঁদের মধ্যে নয়েছে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর, উল্লেখযোগ্য এবং এই কারণে এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে।

২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস

১৯৪৮ সালের মার্চে এ নিয়ে সীমিত পর্যায়ে আন্দোলন হয় এবং ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি তার চরম প্রকাশ ঘটায়। ঐদিন সকালে ১৪৪ ধারা অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা রাজপথে বেরিয়ে এলে পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালামসহ কয়েকজন ছাত্র হতাহত হন। এই ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ ঢাকাবাসী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলে সমবেত হয়। নানা নির্যাতন সত্ত্বেও ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরা প্রতিবাদ জানাতে পরের দিন ২২ ফেব্রুয়ারি পুনরায় রাজপথে নেমে আসে। তারা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে শহীদদের জন্য অনুষ্ঠিত গায়েবি জানাজায় অংশগ্রহণ করে।

ভাষাশহীদদের স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি এক রাতের মধ্যে মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে গড়ে ওঠে একটি স্মৃতিস্তম্ভ, যা সরকার ২৬ ফেব্রুয়ারি গুঁড়িয়ে দেয়।[২] একুশে ফেব্রুয়ারির এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলন আরও বেগবান হয়।

১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যখন যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করে তখন ৭ মে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ১৯৫৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে তখন সংবিধানে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছিল । ১৯৮৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে বাংলা ভাষা প্রচলন বিলপাশ হয়। যা কার্যকর হয় ৮ মার্চ ১৯৮৭ সাল থেকে।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস – History Of The Language Movement Of 1952

আন্তরজাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি

কানাডার ভ্যাঙ্কুভার শহরে বসবাসরত দুই বাঙালি আব্দুস সালাম এবং রফিকুল ইসলাম প্রাথমিক উদ্যোক্তা হিসেবে তারা একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার আবেদন ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের কাছে জানিয়েছিলেন। সে সময় সেক্রেটারী জেনারেলের প্রধান এবং তথ্য কর্মচারী হিসেবে কর্মরত হাসান ফেরদৌসের নজরে এ চিঠিটি আসে।
তিনি ১৯৯৮ সালের ২০ শে জানুয়ারী রফিককে অনুরোধ করেন তিনি যেন জাতিসংঘের অন্য কোন সদস্য রাষ্ট্রের কারো কাছ থেকে একই ধরনের প্রস্তাব আনার ব্যবস্থা করেন। পরে রফিক, আব্দুস সালামকে সাথে নিয়ে “মাদার ল্যাংগুয়েজ লাভার্স অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড” নামে একটি সংগঠন দাঁড় করান। এতে একজন ইংরেজিভাষী, একজন জার্মানভাষী, একজন ক্যান্টোনিভাষী, একজন কাচ্চিভাষী সদস্য ছিলেন। “এ গ্রুপ অব মাদার ল্যাংগুয়েজ অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড”-এর পক্ষ থেকে তারা আবারো কফি আনানকে একটি চিঠি লেখেন, এবং চিঠির একটি কপি ইউএনওর কানাডীয় দূত ডেভিড ফাওলারের কাছেও প্রেরণ করা হয়।

১৯৯৯ সালে তারা ইউনেস্কোর আনা মারিয়ার সাথে ও পরে জোশেফের সাথে দেখা করেন, আনা মারিয়া পরামর্শ দেন ৫ টি সদস্য দেশ প্রস্তাব – কানাডা , ভারত, হাঙ্গেরি, ফিনল্যান্ড এবং বাংলাদেশ দ্বারা আনীত হতে হবে। তারপর বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন দানে ২৯টি দেশ অনুরোধ জানাতে কাজ করেন।

১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় ও এতে ১৮৮টি দেশ সমর্থন জানালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় । জাতিসংঘের সদস্যদেশসমূহে ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে।

২০১০ সালের ২১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে এখন থেকে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবে জাতিসংঘ এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস হয়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের প্রস্তাবটি সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে উত্থাপন করে বাংলাদেশ। মে মাসে ১১৩ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের তথ্যবিষয়ক কমিটিতে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে পাস হয়।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস – History Of The Language Movement Of 1952

উদযাপন

১৯৫২ সাল থেকে প্রতি বছর এ দিনটি জাতীয় শহিদ দিবস হিসেবে উদ্‌যাপিত হয়ে আসছে। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনায় ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা এক মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে একাদিক্রমে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষকবৃন্দ, ঢাকাস্থ বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন এবং সর্বস্তরের জনগণ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন।সে সময় আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি এই গানের করুণ সুর বাজতে থাকে।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর একুশে ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষিত হয়। এদিন শহীদ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে রেডিও, টেলিভিশন এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দেশের সংবাদপত্রগুলিও বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। বাংলা একাডেমি ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে ঢাকায় একুশে বইমেলার আয়োজন করে।

সময়রেখা

১৯৫২: বাংলা ভাষা আন্দোলন
১৯৫৫: বাংলাদেশে ১৯৫৫ সালে প্রথম ভাষা আন্দোলন দিবস পালিত হয় ।
১৯৯৯: ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারি কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
২০০০: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উদ্বোধনী উদযাপন ।

শেষ কথা

২১ শে ফেব্রুয়ারি হলো বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস । আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলটি দ্বারা আসা করি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। সর্বপ্রথম ১৯৯৯: ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারি কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ২০০০: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উদ্বোধনী উদযাপন ।

FAQ

একুশে ফেব্রুয়ারি অনুচ্ছেদ ১০ টি বাক্যে

২১ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, বাঙালি জাতির জন্য একটি গৌরবের দিন এবং সারা পৃথিবির মাতৃভাষাভাষী মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। ১৯৫২ সালে এই দিনেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাঙালি ছাত্রদের আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন রফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ বেশ কয়েকজন।
আরো পড়ুন

একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে লেখা

১৯৫২ সালে এইদিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮, বৃহস্পতিবার) বাংলাকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকায় আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে অনেক তরুণ ছাত্র শহীদ হন। যাঁদের মধ্যে রফিক, জব্বার, শফিউর, সালাম, বরকত উল্লেখযোগ্য এবং এই কারণে এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে।

একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হল প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি পালিত একটি বিশেষ দিবস, যা ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ নভেম্বরে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী পালন করা হয়। এটি শহীদ দিবস হিসাবেও পরিচিত। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পাকিস্তানের পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিবর্ষণে রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার, শফিউলসহ অসংখ্য মানুষ নিহত হন।
আরো পড়ুন

একুশে ফেব্রুয়ারি অনুচ্ছেদ পঞ্চম শ্রেণি

২১ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, বাঙালি জাতির জন্য একটি গৌরবের দিন এবং সারা পৃথিবির মাতৃভাষাভাষী মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। ১৯৫২ সালে এই দিনেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাঙালি ছাত্রদের আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন রফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ বেশ কয়েকজন।
আরো পড়ুন

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা

এ দিনটি বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৯৫২ সালে এইদিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮, বৃহস্পতিবার) বাংলাকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকায় আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে অনেক তরুণ ছাত্র শহীদ হন।

শহীদ দিবস কত সালে?

ভারত ১৯৪৮ সালে মহাত্মা গান্ধীর গুপ্তহত্যার দিনে, অর্থাৎ ৩০ জানুয়ারিতে ভারতে জাতীয় শহীদ দিবস পালিত হয়। এছাড়া, ১৯৯১ সালে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ ১৩ জন ব্যক্তির উদ্দেশ্যে ২১ জুলাই তারিখে পশ্চিমবঙ্গে শহিদ দিবস পালিত হয়।

If You Want To Read English Article Then Visit This Website: Thanks

If You Like This Article Then You Can Share This On Your Social Media Handel

Leave a Reply